হাড় কাঁপানো শীত যদিও এখনো পরে নি, তবু শীতের একটা হালকা আমেজের অনুভূতি কিন্তু হচ্ছে। গেলো বছর থেকে আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করছি যে, শীতের শুরু হওয়ার আগেই আমার হাত খুব শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে উঠে। ঠিক পা এর ক্ষেত্রেও। আর কি! হাতের পায়ের একটা বাড়তি যত্ন শুরু করতে হল। তার উপর শীতকাল বিয়েরও মৌসুম বটে। হাত পা যদি সুন্দর না থাকে তাহলে তো সমস্ত সাজটাই মাটি। এই বছর আমি বেশ কিছু বিয়েতে অংশ গ্রহণ করবো। সেই কথা মাথায় রেখেই হাতের বাড়তি যত্ন নিতে হচ্ছে।
হাতের ব্যবহার আমাদের সব থেকে বেশি
করতে হয়। শরীরে এক গাদা গরম জামাকাপড় পড়লেও হাত প্রায় সব সময়ই উন্মুক্ত থাকে।
শীতের শুষ্ক আবহাওয়া প্রভার সরাসরি হাতের উপর পরে। যার ফল, হাত কালো দেখায়,
চুলকায়, শুষ্ক, রুক্ষ, চামড়া উঠতে শুরু করে , ইত্যাদি ইত্যাদি।
গত বছর আমার হাতের এতো খারাপ অবস্থা
ছিলো, শুষ্ক হয়ে হাতের চামড়া উঠতে শুরু করে। তারপর কিছু বেসিক টিপস ফলো করতে শুরু
করলাম। এবছর একদম ঠিক। এই সহজ টিপসগুলিই আজ আপনাদের সঙ্গে সেয়ার করবো।
১। প্রথম যে কাজ করতে হবে, সেটি হল একটা ভালো ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশন নির্বাচন করতে হবে, যা আপনার ত্বকে সুট করে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে
সাহায্য করে।
২। ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে গ্লিসারিন মিশিয়ে রাখুন একটি আলাদা বোতলে। ১২০ ml বোলতে ১ চামচ গ্লিসারিন যথেষ্ট।
৩। যারা চাকরি করেন বা পড়ুয়া স্কুল কলেজে যান, সব সময় ব্যাগে ময়েশ্চারাইজার রাখুন। এমন কি গৃহিণীরাও হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজার রাখুন। বাসন মাজা হয়ে গেলে হাত ধুয়ে সঙ্গে সঙ্গে লাগিয়ে
নিন ময়েশ্চারাইজার। ভ্রমণের সময় অবশ্যই ব্যাগের এক
কোণে রেখে দিতে পারেন ময়েশ্চারাইজার।
৪। সাবান
ব্যবহার না করে হ্যান্ড ওয়াশ ব্যবহার করুন। হ্যান্ড
ওয়াশ অনেক বেশি লাইট থাকে। আর
হ্যান্ড ওয়াশ কেনার সময় দেখে নেবেন যেন হ্যান্ড ওয়াশটি অ্যালোভেরা
যুক্ত হয়। অ্যালোভেরাতে ময়েশ্চারাইজিং উপাদান বেশি
পরিমাণে বিদ্যমান থাকে।
৫। খুব গরম বা
খুব ঠাণ্ডা জলে কখনই হাত ধুবেন না। দুটোই ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক। ত্বককে আরও বেশি
শুষ্ক করে তুলবে। তাই ট্রাই করবেন দিনের একটা সময় বিশেষ করে রাতে ঘুমনোর আগে
ঈষদুষ্ণ গরম জলে হাত ধোয়ার।
৬। প্রতিদিন
রাতে লিকুইড সোপ নরম ব্রাশে নিয়ে হাতে জমা ময়লা বা মরা
চামড়া ভালোভাবে পরিস্কার করুন।
পাশাপাশি নখও পরিস্কার করুন। তারপর ঈষদষ্ণু জলে হাত ধুয়ে গ্লিসারিন মেশানো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
৭। আরেরটা জিনিস
আমি মাস্ট মাস্ট ফলো করি, ঘরের কাজ আমি সব সময় গ্লাভস পরে করি। এতে হাত সাবান ,
অতিরিক্ত জলের হাত থেকে রক্ষা পায়। আপনারাও ট্রাই করে দেখতে পারেন। অনেকটা কথা ঠাণ্ডাতে
বাইরে বেরনোর সময় হাত মোজা পড়তে কিন্তু ভুবেন না।
৮। শীতকালে কম
জল খেলে হবে, এমনটি কিন্তু একদমই ভাবেন না। বরং এই সময়ে শরীরে জলের চাহিদা বেশি
থাকে। তাই শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখবার
জন্য ৩ থেকে ৪ লিটার জল খান।
৯। শীতকালে মাসে অন্তত একবারঅবশ্যই কোনো ভালো পার্লারে
গিয়ে ম্যানিকিওর করিয়ে নেবেন। বা বাড়িতেও করতে পারেন। সপ্তাহে তিন দিন স্ক্রাবিং করুন।
১০। দু’য়েকটা
ঘরোয়া টিপস ফলো করতে পারেন, এই সময়ে যথেষ্ট উপকারি –
-১টি পাতিলেবুর রস ও ২ চা চামচ
চিনির মিশ্রণ দিয়ে হাত ঘষতে পারেন। এতে মরা কোষ উঠে হাত মসৃণ হবে।
- হাতের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ১
টেবিল চামচ ময়দা দুধে গুলে হাতে মেখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। এরপর হাতে
ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না।
আমি তো শীতকালে এই টিপসগুলি ফলো করি। আপনাদের আর কোন টিপস
থাকলে আমার সঙ্গে সেয়ার করুন। কেমন লাগলো আজকের পোস্ট অবশ্যই জানাবেন।
take care
Facebook এর আমাদের সঙ্গে থাকুন।