আমার
ব্লগের সব থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি হল চুল সংক্রান্ত। চুলের সমস্যাই বোধ হয় আমাদের
সব থেকে বেশি। ফলে চুলের টিপের প্রতি আমাদের বেশি আকর্ষন। তাই ভাবলাম আজও একটি
ব্লগ লেখি চুল নিয়ে। আজকের ব্লগে চুলের বিভিন্ন সমস্যার কিছু ঘরোয়া টিপস দেবো, আশা
করি কাজে আসবে। তবে তার আগে আপনাদের কাছে জানতে চাইবো, কারিপাতা দিয়ে তৈরি তেলটি
কি ব্যবহার করছেন? আমার কিন্তু বেশ চুল পড়া কমেছে। দেরী না করে ট্রাই করে দেখুন।
রুক্ষ ও শুষ্ক চুলের সমস্যা
চুলে আর্দ্রতা কম থাকায় চুল রুক্ষ ও শুষ্ক দেখায়। এর জন্য চুল
খুব ভাল করে কন্ডিশনিং করতে হবে। সপ্তাহে তিন দিন শ্যাম্পু করবেন। ভালো হয় যদি কোন
হার্বাল শ্যাম্পু ব্যবহার করা যায়। শ্যাম্পু করার আগে একটু অয়েল মাসাজ করে নেবেন। আমি যেমন এখন
আমার ঘরে তৈরি কারিপাতা তেলটি শ্যাম্পু করার আগে মাসাজ করে নেই। আমারও চুলের ধরন
একটু রুক্ষ ও শুষ্ক, বিশেষ করে আগার দিকটা। এর জন্য একটি ভালো প্যাক হচ্ছে , ঘরে
পাতা টক দই, ডিমের হলুদ অংশ ও মধু
একসঙ্গে মিশানো প্যাক। এই প্যাকটি চুলের গোঁড়া থেকে আগা অব্দি ভালো করে লাগিয়ে ৩০
মিনিটের মতো রেখে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। শ্যাম্পু করার পর চুলের লেংথে কন্ডিশনার
লাগিয়ে চার-পাঁচ মিনিট রেখে ধুয়ে নেবেন।
খুসকির সমস্যা
অনেকের চুলেই খুসকির সমস্যা
থাকে এবং এর থেকে মাথায় চুলকানিও হয়ে থাকে আবার ছোট ছোট ফোঁড়াও হয়ে থাকে। এই
সমস্যা সাধারণত আবহাওয়ার জন্য, অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে অথবা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা ঠিকঠাক না হলে, বা চুলের গোঁড়ায় ময়লা জমা থাকে এই ধরনের চুলের
সমস্যা হয়ে থাকে। এর জন্য ৩
চামচ পাতিলেবুর রস, ২ চামচ অলিভ অয়েল ও ২ চামচ জল একসঙ্গে মিশিয়ে সেটা স্ক্যাল্পে লাগিয়ে
হালকা মাসাজ করবেন। এই অবস্থায় ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে নেবে। এই পদ্ধতিটি
একদিন অন্তর অন্তর করে দেখুন সমস্যা
অনেকাংশে কমে যাবে।
তৈলাক্ত চুলের সমস্যা
শ্যাম্পু করার একদিন পরেই অনেকেরই চুলের গোঁড়ায় তেল জমে যায়। চুলও দেখায়
তৈলাক্ত। এতে চুল অনেক নির্জীব মনে হতে থাকে। এই ধরনের সমস্যার একটি খুব সহজ
সমাধান হল, ওটসকে সামান্য গরম করে খুব ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এবার একটি
পরিষ্কার নুনদানি বা গোলমরিচদানিতে কিছুটা গুঁড়ো নিয়ে সেটা চুলের স্ক্যাল্পে
আস্তে-আস্তে ছড়িয়ে দিতে হবে। এইভাবে দশ মিনিট রেখে একটি প্যাডেল হেয়ার ব্রাশ দিয়ে
ভাল করে চুল আঁচড়ে নেবেন। এই পদ্ধতিটি একদিন অন্তর করতে পার। এই পদ্ধতি চুল থেকে
বারতি তেল দূর করতে সাহায্য করে।
চুলের ডগা ভাঙার সমস্যা
২ চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে ২ চামচ ক্যাস্টর
অয়েল ও ২ চামচ অলিভ অয়েল বা ২ চামচ আমন্ড অয়েল একটি পাত্রে মিশিয়ে নিন। এই তেল
সামান্য গরম করে স্ক্যাল্পে ও চুলে ভাল করে লাগিয়ে হালকা মাসাজ করবেন। এর পর একটি
শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে পুরো চুল বেঁধে নেবেন। সারারাত রেখে দিয়ে পরদিন
সকালে শ্যাম্পু করে নিন। এতে চুলের ডগা ভাঙা সমস্যা দূর হবে
ও চুলের ডগা লাল হয়ে যাওয়ার সমস্যাও চলে যাবে।
চুলের গোঁড়া শক্ত করতে
চুলের গোঁড়া শক্ত করে কারিপাতার তেল খুব ভালো কাজ করে।
এছাড়াও ৫০ গ্রাম নারকেল তেলের সঙ্গে সমপরিমাণ সরষের তেল মিশিয়ে নিয়েও ব্যবহার করা
যেতে পারে। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন তুলো দিয়ে চুলের গোঁড়ায় লাগিয়ে নিতে হবে।
চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য
১/২ কাপ ঘরে পাতা টক দই, ৩ চামচ বিয়ার ও ১ টি
গোটা ডিম মিশিয়ে শ্যাম্পু করার ১ ঘণ্টা আগে মাথায় লাগিয়ে রাখুন। এই প্রক্রিয়া
সপ্তাহে অন্তত একবার অনুসরণ করুন।
চুলের গোছা বাড়াতে
শ্যাম্পু করার পরে হালকা গরম জলে ২ টেবিল চামচ ভিনিগার
মিশিয়ে নিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এরপর চুল স্বাভাবিকভাবে শুকিয়ে নিন। জলের মাপ হবে ৪
কাপ।
টিপসগুলি ভালো লাগলে লাইক ও সেয়ার করুন ।
0 মন্তব্যসমূহ