চুল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা
একবার হলেও আমরা করেছি। কেই করেছি কালার ব্যবহার করে, তো কেউ করেছি বিভিন্ন ধরনের
হেয়ার কাট করে। চুল স্ট্রেট করা নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করতে
তো ইচ্ছে করে,কিন্তু ভয় লাগে তাতে যদি চুলের বারোটা না বেজে যায়। যাদের চুল লম্বা, বা একটু কোঁকড়ানো তাদের মনে কোনও না কোনও
সময় চুল স্ট্রেট করার কথা উঁকি দিয়ে যায়নি,
একথা বললে মিথ্যে বলা হবে। অথচ
মনে সাধ থাকলেও খরচের ভয়ে চুল স্ট্রেট করা আর হয়ে ওঠেনি। তার মধ্যে আবার এই
কথাগুলো মাথায় ঘুরেছে যে চুল স্ট্রেট করা মানেই একগাদা কেমিক্যালস আর হিটের
প্রভাবে চুলের একেবাবে দফারফা হয়ে যাবে। শুনেছি তারপর নাকি খুব চুলও পরতে শুরু
করে। হয়। চুলের আগা ফাটে ও চুল হয়ে ওঠে রুক্ষ। তা হলে উপায় কী? উপায় তো একটা আছেই। প্রাকৃতিক
উপায়ে চুল স্ট্রেইট করলে কেমন হয়? এতে
চুল ভালোও থাকবে পাশাপাশি চুল
স্ট্রেইট করা আশাটাও পূরণ হবে।
উপায় ১
স্ট্রবেরি / কলার ফ্রুট প্যাক
স্ট্রবেরি বা খুব পাকা কলা চটকে তার সঙ্গে দুধ ও মধু
মিশিয়ে প্যাক তৈরি করবে। সেই প্যাক চুলে লাগিয়ে আধঘণ্টা রাখার পর ধুয়ে ফেলবে। চুল
শুকিয়ে গেলে দেখবে চুলে অনেক ঔজ্জ্বল্য এসেছে এবং অনেকটা স্ট্রেটও হয়ে গিয়েছে।
দুধের স্প্রে
দুধের মধ্যে স্বাভাবিক
ময়শ্চারাইজ়ার রয়েছে। চুল স্ট্রেট রাখতে ময়শ্চারের খুব প্রয়োজন হয়। এই পদ্ধতিতে চুল স্ট্রেইট করার জন্য আপনার লাগবে মাত্র ১/৩
কাপ দুধ, ১/৩
কাপ জল ও একটি স্প্রে বোতল। প্রথমে দুধ ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিতে হবে।চুল যদি বেশি কোঁকড়া হয় তবে মিশ্রনে ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। দুধ ও জল ভালো ভাবে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে রেখে চুলে অল্প করে স্প্রে করুন। ১ ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করে নিন। চুল শুকিয়ে গেলেই দেখবেন স্ট্রেইট হয়ে গেছে। এতে আবার চুলের আর্দ্রতাও বজায় থাকবে। জল না লাগানো পর্যন্ত চুল সোজা থাকবে।
উপায় ৩
মুলতানি মাটির হেয়ার মাস্কএই পদ্ধতি জন্য লাগবে ১ কাপ মুলতানি মাটি, ১ টি ডিম, ৫ চা চামচ চালের গুঁড়ো। একটি পাত্রে ডিম খুব ভালো করে ফেটিয়ে নিন। এরপর এতে মুলতানি মাটি ও চালের গুড়ো মিশিয়ে একটি পেস্টের মত তৈরি করুন। বড় দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুলের জট ছাড়িয়ে পেস্টটি চুলে লাগিয়ে নিন। যতটা সম্ভব চুল সোজা রেখে পেস্টটি লাগান।পেস্ট চুলে লাগিয়ে আধঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। আধঘণ্টা পর চুলে আলতো করে চিরুণি দিন। এবার আবার ওই প্যাক লাগাতে হবে। তারপর আবার চিরুণি দিন এবং প্যাক লাগান। এই পদ্ধতি অন্তত তিনবার রিপিট করুন। এবার পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। প্রতি ৫ দিনে ১ বার করে এই পেস্টটি চুলে লাগান। চুল প্রাকৃতিকভাবেই স্ট্রেইট হয়ে যাবে।
উপায় ৪
অলিভ ওয়েল ও ডিমের মিশ্রণ
মিশ্রণটি তৈরি করতে লাগবে ২ টি ডিম ও ২ চা চামচ অলিভ ওয়েল। একটি বাটিতে ভালো করে ২ টি ডিম ফেটে নিন। এতে অলিভ ওয়েল মেশন। একটি হেয়ার ব্রাশের সাহায্যে মিশ্রণটি চুলের সব দিকে ভালো করে লাগান। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল স্ট্রেইট হবে এবং পাশাপাশি চুলের উজ্জলতাও বাড়বে।
অলিভ ওয়েল ও ডিমের মিশ্রণ
মিশ্রণটি তৈরি করতে লাগবে ২ টি ডিম ও ২ চা চামচ অলিভ ওয়েল। একটি বাটিতে ভালো করে ২ টি ডিম ফেটে নিন। এতে অলিভ ওয়েল মেশন। একটি হেয়ার ব্রাশের সাহায্যে মিশ্রণটি চুলের সব দিকে ভালো করে লাগান। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল স্ট্রেইট হবে এবং পাশাপাশি চুলের উজ্জলতাও বাড়বে।
উপায় ৫
নারকেলের দুধ ও লেবুর রসের মিশ্রণ
প্রথমে গ্রাইন্ডারে নারিকেলের টুকরো দিয়ে টা থেকে দুধ
বের করুন(চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী দুধের পরিমাণ হবে)।এবার ওই দুধ একটা কাচের পাত্রে
রেখে তার মধ্যে দু’চার ফোঁটা পাতিলেবুর রস ফেলে দিন। ওই মিশ্রণ আধঘণ্টার জন্য
ফ্রিজে রেখে দিন। আধঘণ্টা পর দেখবে ওই মিশ্রণ থেকে একটা সাদা ফেনা মতো বের হচ্ছে।
ওই ফেনাই স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট রেখে দেওয়ার পর জল দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। সঙ্গে সঙ্গে শ্যাম্পু না করে কিছুক্ষণ পরে করুন।
শ্যাম্পু করার পর
নিয়মিত চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবে চা পাতার লিকার
খুবই উপকারি। যাদের চুল একটু কোঁকড়ানো তারা কিন্তু হিসাবে চা পাতার লিকারকে কন্ডিশনার
হিসাবে ব্যবহার করে পারেন। পাতার লিকার চুল স্ট্রেইট হতে সাহায্য করে।এটি সত্যিই কাজের। আজকের পোস্টটি কেমন লাগলো অবশ্যই
জানাবেন।
টিপসগুলি ভালো লাগলে লাইক ও সেয়ার করুন !
take care