ত্বকের লাবণ্য, উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত ফেসিয়ালের জুড়ি নেই। তবে মনে আমার ব্যক্তিগত মতামত যে গোল্ড, সিলভার, ডায়মন্ড, ফেয়ার পলিশ কোনটাই ২৮ বছর বয়সের আগে করা উচিত না। বরং সেক্ষেত্রে হার্বাল জাতীয় ফেসিয়াল করাই ভালো। হার্বাল ফেসিয়ালে যে প্রাকৃতিক উপাদানগুলো রয়েছে তা ত্বকের পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। হার্বাল ফেসিয়ালের সব থেকে সুবিধা হল এর জন্য আপনাকে পার্লারে দৌড়াতে হবে না। খুব কম খরচে মাত্র কয়েকটি উপাদান যা আপনার রান্না ঘরেরই রয়েছে তা ব্যবহার করে এই ফেসিয়াল করা যায়। চলুন তাহলে দেখেই প্রতিটি স্টেপ আর রেসিপি –
স্টেপ ১
প্রথমেই চুল খুব ভালো করে পেছন দিকে টেনে বেঁধে নিতে হবে, মুখে চুল না আসে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
প্রথমেই চুল খুব ভালো করে পেছন দিকে টেনে বেঁধে নিতে হবে, মুখে চুল না আসে সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
স্টেপ ২
এই ধাপে আমি মুখ ক্লিন করি। এর জন্য সব থেকে ভালো উপাদান হচ্ছে মধু। এক চামচ মধু দিয়ে মুখ মাসাজ করে নেই। এর পরে গরম জলে একটা soft towel ডুবিয়ে সেটা নিয়ে মুখ মুখে নেই। এই পদ্ধতিটা আমি আরও একবার রিপিট করি, তবে সেক্ষেত্রে মধু ব্যবহার করিনা, অলিভ তেল ব্যবহার করি। যাদের হাতের কাছে অলিভ তেল নেই তাঁরা নারকেল তেলও ব্যবহার করতে পারেন। তারপর গরম জলে ভেজা soft towel দিয়ে মুখটা ভালো করে মুঝে নিন। এই ক্লিনিং পদ্ধতির মতো আমার মনে হয় আর কোন ভালো ন্যাচারেল উপায় আছে। এই মুখ পরিষ্কারের জন্য এই কিন্তু সব ধরনের ত্বকের জন্য । আর যাদের ব্রণের সমস্যা আছে সেটাও সেরে যায়। আমার নিজের ব্রণের সমস্যা আছে। আমি ব্রণের মধ্যেও অলিভ তেল ব্যবহার করি। OCM (oil cleansing method ) ব্রণ সারাতে সাহায্য করে। আমি এই নিয়ে একটা ব্লগও লিখেছি। নীচের লিঙ্কটিতে গিয়ে পড়ে নিতে পারে।
Link : http://t.co/P8Cr1FUCkU
স্টেপ ৩
এই স্টেপটি অনেক গুরুত্বপূর্ন। আগের স্টেপ এ মুখ তো ক্লিন হল আর এই স্টেপ মুখের যে মরা কোষ আছে তা দূর হবে। এই স্টেপে আমি স্ক্রাবিং করবো। স্ক্রাবিং শুধু মুখের নয় এক্ষেত্রে ঠোঁটের স্ক্রাবিং ও করে নেবো। আমি আমার ব্লগে অনেক অনেক ঘরে তৈরি স্ক্রাবার রেসেপি দিয়েছি। সেখান থেকে যে কোন একটা রেসেপি বেছে নিতে পারেন। লিঙ্ক নীচে দিয়ে দিলাম –
খুব সহজে ঘরে কি ভাবে স্ক্রাবার তৈরি করবেন -
স্টেপ ৪
স্টেপ ৩ তেই যদি থেমে যেতে হয় তাহলে এখন টোনার ব্যবহার করতে হবে। খুব সহজ, টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন গোলাপ জল। টোনার লাগিয়ে নিয়ে একটা ভালো মশ্চারাইজার লাগিয়ে নিয়ে এখানেই স্টপ করতে পারেন। যা আমি বেশির ভাগ টাইম করে থাকি।
তবে ফেশিয়াল পদ্ধতি আরেকটু লং।
এই স্টেপে আমি facial massage করবো । এর জন্য প্রয়োজন একটা মাসাজ ক্রিম যা আমি ঘরেই বানাই।
এই মাসাজ ক্রিমটি বানাতে যা যা লাগবে –
>> আলভেরা জেল বড় চামচে ৫ চামচ ( আমি ঘরে তৈরি জেল ব্যবহার করি)
>> মধু ৩ চামচ
>> টক দই ৩ চামচ
উক্ত সমস্ত উপাদান ভালো করে মিশিয়ে নিন।
এই মিশ্রণটি খুব ভালো মাসাজ ক্রিমের হিসাবে কাজ করে। ক্রিমটি দিয়ে ১০ মিনিট ফেস মাসাজ করুন।
স্টেপ ৫
মাসাজ ক্রিম টি জল দিয়ে ধুয়ে নিয়ে,এই স্টেপে আমি গরম জলের ভাপ নেই। গরম জলে আমি ৩ ফোঁটা লেমনগ্রাস essential oil মিশিয়ে নিয়েই ভাপ নেই। এতে করে আপনার মুখে লোমকূপ গুলো খুলে যাবে। এবার ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াটহেডস থাকলে তা পরিষ্কার করুন।
স্টেপ ৬
এই স্টেপে আমি ফেস মাস্ক ব্যবহার করি। এখানেও আমি বলবো আমার ব্লগে অনেক ফেস মাস্কের রেসিরি দেওয়া আছে। তবে আমি যে মাস্কটি বেশি ব্যবহার করে থাকি তা হল মুলতানি মাটি আর মধুর মিশ্রন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখি। আর সেই সময় গোলাপ জলে ভেজানো দুটি কটন প্যাড চোখে উপরে দিয়ে শুয়ে থাকি। ফেস মাস্কটি আমি পরিষ্কার করার সময় আমি স্টেপ ২ সে গরম জলের পদ্ধতিটি বলে ছিলাম সেটাই ফলো করি।
স্টেপ ৭
এখন টোনার ব্যবহারের পালা। গোলাপ জল ব্যবহার করুন নয় তো শসার ঠাণ্ডা রস টোনার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। ১০ মিনিটের মতো লাগিয়ে রাখুন।
স্টেপ ৮
লাস্ট স্টেপ মশ্চারাইজার ব্যবহার। এটা আপনি আপনার পছন্দ অনুসারে বেছে নিতে পারেন।
আমি কিছু এক্ষেত্রে সাজেস্ট করবো moisturizer হিসাবে নিম্নলিখিত যে কোনো ব্যবহার করতে পারেন -
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য - ঘৃতকুমারী
স্বাভাবিক ত্বকের জন্য - জলপাই তেল বা বাদাম তেল
শুষ্ক ত্বকের জন্য - নারকেল তেল
এটি একটি সম্পূর্ন ঘরোয়া পদ্ধতিতে হার্বাল ফেসিয়াল প্রক্রিয়া। যা আমি ফলো করি। কেমন লাগলো আজকের এই পোস্ট জানাবেন। কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই করবেন।