আমার মনে আছে, বিয়ের প্রথম প্রথম আমার বর ফ্রিজে প্রসাধনী রাখা নিয়ে প্রায়ই একটা কথা বলতো। কোন মেয়েই নাকি এই ভাবে ফ্রিজে প্রসাধনী রাখে না, শুধু আমি রাখি। এই নিয়ে সে খুব মজা করতো। আবার এও বলতো ফ্রিজে খাবার জিনিসের চাইতে সাজের জিনিস নাকি বেশি। আমি বরাবরই ফ্রিজে আমার কিছু প্রসাধনী রাখি। সত্যি ফ্রিজের দরজার ডালাতে অন্য কোন জিনিস রাখবার এক বিন্দু যায়গা নেই।
কিছু কিছু প্রসাধনী আছে যার গায়ে লেখা থাকে, ঠান্ডা ও অন্ধকার স্থানে যেনো রাখা হয়। আবার কোন কোন প্রসাধনীর গায়ে উল্লেখ করা থাকে যে, সেটি কত ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে রাখা যেতে পারে। অতিরিক্ত গরমে কসমেটিকসের নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অন্য দিকে ফ্রিজের তাপমাত্রা থাকে স্থির। তাই এই স্থির তাপমাত্রায় জিনিস রাখলে ভাল থাকবে বহু দিন।
আমি যে যে কসমেটিকসগুলি ফ্রিজে রাখি তার একটা লিস্ট আপনাদের সঙ্গে আজকের পোস্টে সেয়ার করলাম।
লিপস্টিক ও লিপবাম ঃ
আমার প্রিয় লিপস্টিক্গুলি আমি সব সময় ফ্রিজে রাখে। যদিও ডেইলি ব্যবহারের লিপস্টিকটি থাকে আমার ব্যাগে অথবা একদম হাতের কাছে। তবে লিপস্টিক ব্যাগে বা বাইরে রাখলে গরমকালে একদম নরম হয়ে যায়। এই নরম হওয়াতে আমার দুটি লিপস্টিক ভেঙ্গেও গেছে। তাই ডেইলি ব্যবহারের গলে যাওয়া লিপস্টিকটি ঘণ্টা খানেক ফ্রিজে রেখে দিলে আবার আগের মতো শক্ত হয়ে যায়। একই পদ্ধিতি আমি লিপবামের ক্ষেত্রেও ফলো করি।
নেইল পলিশ ঃ
রোদের আলো এবং গরম নেইল পলিশের পাতলা ভাবকে পুরুতে পরিণত করে এমন কি অনেক সময় রঙের পরিবর্তন হতে পারে। তাই রেফ্রিজারেটর মধ্যে নেইল পলিশ রাখলে পেইন্ট পাতলা থাকতে এবং তার প্রকৃত রং সংরক্ষিত থাকে।
আই লাইনার ও মাস্কারা ঃ
আই লাইনার ও মাস্কারার মেয়ার অনেক কম থাকে। আই লাইনার যাও ১ থেকে ২ বছর রেখে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু মাস্কারা খোলার ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। এই কসমেটিকসগুলির মেয়াদ সামান্য স্থায়ী করার জন্য আমি এগুলি ফ্রিজে রাখি। এছাড়াও নতুন আই লাইনার ও মাস্কারা কেনার পর আমি সঙ্গে সঙ্গেই সেগুলির সিল খুলি না। পণ্যগুলি সময় বাড়ানোর জন্য ফ্রিজে রেখে দেই। পুরনোগুলি যখন শেষের পথে তখনই নতুনগুলি খুলি।
টোনার ঃ
টোনারের প্রধান উদ্দেশ্য ওপেন পোরস সঙ্কুচিত করা, পাশাপাশি ত্বকে ফ্রেস এবং টাইট করা। টোনারে যে উপাদানগুলি ব্যবহার করা হয় জন্য টোনার এমনিতেই ঠাণ্ডা থাকে। আমি ফ্রিজে টোনার রাখি আরও ভাল ফল পাওয়ার জন্য।
ঘরে তৈরি মাস্ক ও লোশন ঃ
আমরা ঘরে যে সমস্ত মাস্ক বা লোশন তৈরি করি খুব ভাল হয় ব্যবহারে কিছুক্ষণ আগে তৈরি করে নেওয়া। কারন এই ধরনের সামগ্রি ঘরের তাপমাত্রায় কিছু সময়ের জন্য ভাল থাকে। আবার আমারা তো আর এতে preservatives অন্য কিছু মেশাই না। তাছাড়া সময়ের অভাব বা ঠিক যে পরিণাম মতো মাস্ক ও লোশন লাগবে, আর ততটাই সব সময় তৈরি করা সম্ভব না । তাই বারতিটুকু মাস্ক ও লোশন আমি ফ্রিজে রাখি। এই ভাবে ঘরে তৈরি বিউটি প্রডাক্ট এক সপ্তাহের মতো ভাল থাকে।
এছাড়া আমি আরও যে সমস্ত প্রডাক্ট ফ্রিজে রাখি যেমন শীতকালীন ক্রিম যা গরমে ব্যবহার করতে পারবো না। শীতকালে ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ ও শুষ্ক থাকে, তাই প্রয়োজন পরে ভারি ক্রিমের। গরমকালে যেহেতু এই ক্রিম ব্যবহার করা যায় না তাই ফ্রিজে রাখাই ভাল। সাধারণত ক্রিমের মেয়াদ ২ থেকে ৩ বছর থাকে। তাই নেক্সট শীতে পুরনো ক্রিম অনায়াসে ব্যবহার করা যায়।
অনেকে আবার পারফিউম ফ্রিজে রাখেন। গরম বা সূর্যের আলো যে কোনো সুগন্ধির গুণাগুণ নষ্ট করে দিয়ে পারে। তাই বেশিদিন সুগন্ধি সামগ্রী ব্যবহার করতে চাইলে ফ্রিজে রাখাই উত্তম। কিন্তু আমি আমার সুগন্ধিগুলি আমার সাজের টেবিলেই রাখতে বেশি পছন্দ করি।
টিপসগুলি ভালো লাগলে লাইক ও সেয়ার করুন
0 মন্তব্যসমূহ