ব্রণ থাকলে ত্বকের যত্ন কিভাবে নেবেন?


ব্রণর সমস্যা যে শুধু টিনেজদেরই, তা কিন্তু নয় যেকোন বয়সেই ব্রণের সমস্যা দেখা দিতে পারে ব্রণের হাত থেকে মুক্তি এবং এর পাশাপাশি এর দাগের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রয়োজন সঠিক পরিচর্চা কি ভাবে এই সময় ত্বকের পরিচর্চা করবেন ?
কিছু কিছু সহজ উপায় আছে যা ফলো করলে সহজেই ব্রণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এরকমই কিছু টিপস আজ সেয়ার করছি।

ত্বকে ব্রণ থাকলে ফেসিয়াল করার কথা একদমই ভাববেন না। এতে ব্রণ আরও বাড়বে। যতটা পারা যায় ত্বককে ড্রাই রাখার চেষ্টা করুন। ত্বক ড্রাই রাখা মানে কিন্তু এই নয় যে একগাদা সাবান বা ফেশ ওয়াশ দিয়ে কিছুক্ষণ পরে পরে  মুখ ধুয়ে নিলাম। বেশি সাবান বা ফেশ ওয়াশ ব্যবহার করাটাও ঠিক নয়। কারন, এতে করে ত্বকের নিজেস্ব তেল ভাবটা নষ্ট হয়ে যায়। দিনে দুবার ফেশ ওয়াশ ব্যবহার করুন। যদি বাইরে বেশি বের হতে না হয়, তাহলে বেস্ট রাতে শোয়ার আগে ফেশ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নেওয়া।


এছাড়া ব্রনের স্থানে সামান্য বেসন মধুর প্যাক বানিয়ে লাগিয়ে রাখুন। এই প্যাকটি খুব ভালো কাজ দেয়। এক্ষেত্রে মধুটা হালকা গরম করে নিতে হবে, এবার তার সঙ্গে ঈষদুষ্ণ জল নিয়ে বেসনটা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করবে। এই মিশ্রণটা পুরো মুখে কুড়ি মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। আর যদি শুধু ব্রণের স্থানে লাগিয়ে রাখতে হয়, তাহলে ঘণ্টার মতো লাগিয়ে রাখা যাবে। মিশ্রণটা শুকনোর সঙ্গে-সঙ্গে ব্রণের আদ্রর্তা টেনে সেটাও খানিকটা শুকিয়ে দেয়। মুখে ব্রণ থাকলে কখনও কোনও প্যাক সেই জায়গায় ঘষবেন না। এতে ব্রণর মুখ ফেটে ত্বকে বিশ্রী দাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে

ব্রণের সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার আরেকটি খুব সহজ সমাধান হচ্ছে চন্দন। চন্দন বাটার সঙ্গে গোলাপজল মিশিয়ে মুখে মাখতে পারেন। এই মিশ্রণটা রাতে শোওয়ার আগে মুখে লাগিয়ে রাখুন এবং পরের দিন ঘুম থেকে উঠে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। যাদের খুব বেশি তৈলাত্বক ত্বক তারা জল দিয়ে না ধুয়ে ঝেড়েও ফেলতে পারেন। এতে ত্বকের তেল ভাবটা অনেক কমে আসে


ব্রণর ত্বকে অনেকই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন না। অনেক ধারনা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে আরও বেশি ব্রণ হয়। কিন্তু আমি এই কথাটি একেবারি মানতে নারাজ। ময়েশ্চারাইজার ত্বকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। কখনই এটি ব্রণের কারন নয়। যাদের ব্রণের সমস্যা আছে তাদের বলবো আমি ‘all skin type’ এই ধরনের লেখা দেখে ময়েশ্চারাইজার কিনবেন না। বাজারে তৈলাক্ত, শুষ্ক মিশ্র ত্বকের জন্য আলাদা আলাদা ময়েশ্চারাইজার পাওয়া যায়। ত্বক অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বাছুন। বিশেষ করে ব্রন যুক্ত ত্বকের জন্য oil free or pimple free or acne pore এই ধরনের লেখা দেখে ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করুন। 

ময়েশ্চারাইজার পাশাপাশি অবশ্যই টোনার রাখা চাই। টোনার কেনার সময়ও oil free or pimple free or acne pore এগুলি দেখে নিন। পাশাপাশি দেখে নিন মধু,, নিম বা আলভেরার কোন একটি বা দুটি উপাদান টোনারে আছে কি না। 

ব্রণের ত্বকের আমি নিজে ব্যাক্তিগত ভাবে কোন ক্লিনজিং মিল্ক প্রেফার করি না। এর থেকে ভালো মাঝেসাঝে ঘরে ক্লিনজিং তৈরি করে ব্যবহার করা। আমার ব্লগে বেশ কিছু ক্লিনজিং রেসিপি আছে, চাইলে দেখে নিতে পারেন। ব্রণের ত্বকে অবশ্যই একটা ফেশ ওয়াশ মাস্ট। এটিও ত্বক অনুসারে বাছতে হবে। 

ব্রণের সমস্যা থাকলে চুলের যত্নও অনেক নিতে হয়। ভাবছেন ব্রণের সঙ্গে চুলের কি সম্পর্ক ? মাথায় খুসকি থাকলেও কিন্তু মুখে ব্রণ হতে পারে বা ব্রণ সারতে চায় না। তাই সব সময় চুল পরিষ্কার রাখুন। এছাড়াও যাদের অনেক ব্রণের সমস্যা আছে  তাদের জন্য বলছি চুলে তেল দিলে এক ঘণ্টার মধ্যে শ্যাম্পু করে নিতে হবে। সুগন্ধি তেল বা অন্য কোন ধরনের তেল বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।

ত্বকে ব্রণ থাকলে মেইকআপ যত কম ব্যবহার করা যায় ততই ভালো। ফাউন্ডেশন, পাউডার ও ব্লাশন কম ব্যবহার করা উচিত। যদি একান্তই করতে হয়, তাহলে মেকআপের বেস হিসাবে ক্যালামাইন জাতিয় প্রডাক্টকে ফাউন্ডেশন হিসাবে ব্যবহার করুন। মেকআপ ব্রাশ সব সময় ব্যবহারের পরে পরিষ্কার করে রাখুন। আর ঘন ঘন ব্রণতে হাত লাগানো থেকে নিজেকে কন্ট্রল রাখতে হবে। ৩ লিটার জল পান করুন প্রতিদিন। স্কুল, কলেজ বা স্যারের বাড়ি থেকে ফেরার পথে ‘নো ফাস্ট ফুড’। তেল বা ফ্যাট জাতীয় খাবার যতোটা সম্ভব কম খাওয়া। এই সাধারন কিছু নিয়ম এক মাস ফলো করে দেখুন। আশা করি যাদের ব্রণের সমস্যা আছে, তারা অনেক ভালো ফল পাবেন। কেমন লাগলো আজকের টিপস জানাবেন। প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই করুন।