ট্যানিং থেকে বাঁচুন !


ত্বকের বড় শত্রু সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি (UVA, UVB)সে আর নতুন করে কি বলি। গরম কালে সূর্যের তেজ থাকে অনেক তীব্র, আর শীতকালে মিষ্টি উত্তাপ। আসলে ত্বক রোদে বেরিয়ে কতটা ক্ষতিগ্রস্থ, সেটা নির্ভর করে আমরা কতক্ষণ রোদের মধ্যে আছি তার উপর। যাদের নিয়মিতি রোদের বের হতে হয় তারা খুব ভালো করে জানেন সানবার্নড এর ফলে ত্বকে নেই জেল্লা, মুখ জুড়ে কালো ছোপ, হাত-পায়েরও এই অবসস্থা। তাহলে এখন কি করনীয়। রোদে বেরনোর সময় আমি যে কাজ সব সময় করে থাকি তা হল, ছাতা সঙ্গে নিতে ভুলি না, বেরনোর ২০ মিনিট আগে SPF ৩০ থেকে ৫০ মধ্যে আমার ত্বকে সুট করে এমন সানব্লক ক্রিম ব্যবহার করি, সানগ্লাস মাস্ট নিয়ে বের হই আর ট্রাই করি এমন পোশাক পরতে যা ফুলস্লিভ সুতির হয়ে থাকে । এছাড়াও সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন বিশেষ কিছু ঘরোয়া টিপ্স ফলো করি।


এখানে একটা কথা অবশ্যই আমি বলবো যে, কমপ্লেকশন অনুযায়ী ট্যানিংয়ের রকমফের হয়ে থাকে। ফরসা নাকি কালো, কোন ট্যাগটা কার গায়ে ঝুলবে, সেটা ঠিক করে দেয় ত্বকের মধ্যে থাকা মেলানিন। মেলানিনের মাত্রা যত বেশি কমপ্লেকশনও তত ডার্ক। ডার্ক কমপ্লেকশনের জন্য কেউ-কেউ মেলানিনের উপর চোখ পাকাতে পারে, কিন্তু এই বস্তুটিই ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মির হাত থেকে ত্বকের রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করে। আর রোদ ত্বকের কতটা ক্ষতি করতে পারল, তার প্রমাণ ট্যানিং। ফরসা ত্বক রোদে খুব তাড়াতাড়ি কালো হয়ে পড়ে। স্কিনে লালচে ছোপ পড়া ছাড়াও ফ্রেকল মানে  তিলের মতো ছোট-ছোট ছোপ পড়তেও দেখা যায়। মাঝারি গায়ের রঙ পুড়ে কালো হয়ে যায় না, তবে ট্যানভাব আসে অনেক তাড়াতাড়ি। আর যারা কালো তারা কিন্তু ত্বকে মেলানিন বেশি থাকায় দরুন রোদে পোড়ার হাত থেকে কিছুটা হলেও বেঁচে গেলেন।

এবার আসি কি করে ঘরোয়া উপায়ে এই ট্যানিং দূর করবেন।

১। বেসন, হলুদ এবং কাঁচা দুধের তৈরি প্যাক ট্যানিং দূর করতে সাহায্য করে। এই প্যাকটি ত্বক স্ক্রাবিং এরও কাজ করে।

২। মিষ্টি সুস্বাদু পাকা ফল পেঁপে রোদে পোড়া দাগ দূর করতে সাহায্য করে। পেঁপেতে উপস্থিত এনজাইম কালো দাগ ধীরে ধীরে অপসারণ করে থাকে। পেঁপের সঙ্গে মধু মিশিয়ে এই প্যাক তৈরি করা হয়।


৩। একচামচ মধু, লেবুর রস, আমন্ড বাদাম বাটা এবং একচামচ দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে মাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলব। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ট্যানভাব দূরে পালাবে


৪। সানবার্নের আর এক উপকারী ওষুধ হল দই। স্নানের আগে বাড়িতে পাতা দই মুখে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে লাগাতে হবে। খানিকক্ষণ থাকার পর স্নান করে  নিন

৫। নিঃসন্দেহে  ঘৃতকুমারী ট্যানিং দূর করতে লা জবাব। আক্রান্ত অংশে নিয়ম করে অ্যালোভেরার রস লাগাতে হবে।  এছাড়াও এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন। ঘৃতকুমারী, টম্যাটো এবং মুসুরি ডাল একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিতে হবে। এই প্যাকটি যেমন ত্বকের পোড়া ভাব দূর করবে তেমনি ত্বকে স্মুথ ও পুনরুজ্জীবিত করে তুলবে।
ত্বকে যে কোনও ধরনের সমস্যা, তা সানবার্ন হোক বা অন্য কিছু। প্রথম কথাই হল ত্বক পরিষ্কার রাখা। ওই অংশে যাতে অন্য কোনও ইনফেকশন না হয়, তার জন্য দিনে এক থেকে দুবার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান বা ফেসওয়শ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। শুধু তাই নয়, অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে স্নান করাও দরকার, এতে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে না। প্রচুর জল খান।  ডিহাইড্রেশনের সমস্যা যাতে না হয়।  শরীরে প্রচুর জলের জোগান দিলে ত্বক তার আদ্রর্তা ফিরে পায়

সানস্ক্রিন সম্পর্কে কয়েকটা তথ্য জানিয়ে রাখি রোজ যে সানস্ক্রিন ব্যবহার করছেন তাতে যেন এসপিএফ (সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর) অন্তত ১৫ এবং ইউভিএ ইউভিবি প্রতিরোধক ক্ষমতা থাকে। ত্বক বাঁচাতে দুঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিনের প্রলেপ লাগাবেন। তবে ঠাঠা পোড়া রোদে একটানা অনেকক্ষণ থাকতে হলে কিন্তু এসপিএফের মাত্রা আরও বেশি হতে হবে, অন্তত ৩০ বা তার বেশি সমুদ্রের ধরে ঘুরতে গেলে এসপিএফ ৭০ এর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন 
ত্বক সুরক্ষায় সেরা ১০ সানস্ক্রিন ক্রিম

রোদের বেরনোর জন্য সানগ্লাস মাস্ট। তাই এটি কেনার সময় অবশ্যই দেখে নেব, তার যেন হান্ড্রেড পারসেন্ট আলট্রাভায়োলেট রে রোধের ক্ষমতা থাকে।

শেষে একটাই কথা বলবো ট্যানিং দূর করার জন্য কোন কড়া কেমিক্যাল বা বাজারে পাওয়া রকমারি ক্রিম বা মলম ব্যবহার না করে,বরং ঘরোয়া টোটকা ট্রাই করুন।

আরও পড়ুন 
শরীরের বিভিন্ন অংশের কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া টোটকা
হাতের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে ঘরে তৈরি স্ক্রাবার
২৫ টি টিপস : হাতের ট্যানকে বলুন বাই
টিপসগুলি ভালো লাগলে লাইক ও শেয়ার করুন!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ